অধ্যায় ৭: মানসিক স্বাস্থ্য ও থাইরয়েড

 


📘 অধ্যায় ৭: মানসিক স্বাস্থ্য ও থাইরয়েড

শরীরের পাশাপাশি মনের যত্ন নেওয়াও জরুরি

আমরা সাধারণত ভাবি, মানসিক চাপ বা মন খারাপ জীবনের সমস্যা থেকেই হয়। কিন্তু অনেক সময় এর পেছনে শারীরিক কোনো কারণ, বিশেষ করে থাইরয়েড হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, থাকতে পারে। থাইরয়েডের প্রভাব শুধু শরীরেই নয় — মনেও পড়ে।

banner

এই অধ্যায়ে আমরা দেখব:

  • কেন থাইরয়েড সমস্যায় মন খারাপ, হতাশা, বা ভয় হয়

  • কীভাবে মানসিকভাবে সুস্থ থাকা যায়

  • এবং পরিবারের সহযোগিতা কতটা গুরুত্বপূর্ণ


banner

😟 হতাশা, ভয় ও মন খারাপের কারণ

📌 হাইপোথাইরয়েডিজম (থাইরয়েড হরমোন কম থাকলে):

  • মস্তিষ্কের কার্যক্রম ধীর হয়ে যায়

  • হতাশা, অনুপ্রেরণাহীনতা, আত্মবিশ্বাসে ঘাটতি দেখা দেয়

  • মন খারাপ থাকার অনুভূতি, যা কখনো ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেশন পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে

  • সহজ কাজেও আগ্রহ থাকে না

banner

📌 হাইপারথাইরয়েডিজম (থাইরয়েড হরমোন বেশি থাকলে):

  • অতিরিক্ত উত্তেজনা, মনোযোগের অভাব

  • ঘুমের সমস্যা, অস্থিরতা

  • ভয়, আতঙ্ক (panic attacks) বা অব্যক্ত উদ্বেগ

  • অতিরিক্ত রাগ বা খিটখিটে মেজাজ

banner

❗ গুরুত্বপূর্ণ:

এই উপসর্গগুলো অনেক সময় মনের সমস্যা বলে ভেবে উপেক্ষা করা হয়। কিন্তু এগুলোর পেছনে হরমোনজনিত কারণ থাকলে মানসিক চিকিৎসার পাশাপাশি থাইরয়েড চিকিৎসাও জরুরি।


banner

💞 মানসিক সমর্থন ও পরিবারের ভূমিকা

থাইরয়েড রোগীরা অনেক সময় আত্মীয়-স্বজন, এমনকি কাছের মানুষদের কাছ থেকেও ঠিক বোঝাপড়া পান না। এতে মানসিক চাপ আরও বাড়ে।

banner

👨‍👩‍👧‍👦 পরিবারের করণীয়:

  • রোগীর মন-মেজাজের পরিবর্তনকে ‘অভিনয়’ বা ‘বাড়াবাড়ি’ ভাববেন না

  • সময় দিন, ধৈর্য ধরুন

  • চিকিৎসার জন্য রোগীকে উদ্বুদ্ধ করুন

  • যেকোনো মানসিক উপসর্গ দেখলে তা লুকিয়ে না রেখে সাহস দিন বলার

  • প্রয়োজনে কাউন্সেলিং বা থেরাপিস্টের সহায়তা নিতে বলুন

banner

🧠 রোগীর করণীয়:

  • নিজেকে দোষারোপ করবেন না

  • নিয়মিত মেডিটেশন, প্রাণায়াম বা হালকা ব্যায়াম করতে পারেন

  • যেটা ভালো লাগে—সঙ্গীত, বই, প্রকৃতি—সে কাজগুলো করুন

  • নিজের অনুভূতি শেয়ার করুন: ডায়েরি লিখতে পারেন বা কাউকে বলুন


banner

📝 উপসংহার:

থাইরয়েড সমস্যা শুধু শারীরিক নয়, মানসিক দিক থেকেও একজন মানুষের জীবনকে প্রভাবিত করে। তাই মনের যত্ন নেওয়া কোনো বিলাসিতা নয় — এটি চিকিৎসারই একটি অংশ। রোগী, পরিবার ও চিকিৎসকের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় সহজেই।

banner


Post a Comment

Previous Post Next Post